আন্তর্জাতিক মানের যুগোপযোগী গ্র্যাজুয়েট তৈরির মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ সৃষ্টির রূপকল্প নিয়ে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিভাসু) আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে চালু হতে যাচ্ছে ‘বায়োটেকনোলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ’।
আজ ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ শনিবার নতুন এই অনুষদের স্নাতক পর্যায়ে কারিকুলাম ও সিলেবাস তৈরির উদ্দেশ্যে “Consultative workshop on development of undergraduate curricula and syllabus for the Faculty of Biotechnology and Genetic Engineering” শীর্ষক দিনব্যাপী এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সিভাসু অডিটোরিয়ামে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত উক্ত কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার এবং চিফ পেট্রোন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিভাসু’র উপাচার্য প্রফেসর ড. এএসএম লুৎফুল আহসান। কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি চিটাগাং (ইউএসটিসি) এর উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সোলাইমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিভাসু’র জেনেটিক্স এন্ড এনিম্যাল ব্রিডিং বিভাগের প্রফেসর ড. মো: কবিরুল ইসলাম খান। সিলেবাস কারিকুলাম প্রণয়ন কমিটির আহবায়ক প্রফেসর ড. এএমএএম জুনায়েদ ছিদ্দিকী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। দিনব্যাপী কর্মশালায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, বিজ্ঞানী ও গবেষকগণ অংশগ্রহণ করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার বলেন, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি আগামী দিনের সম্ভাবনার নতুন হাতিয়ার। গত শতাব্দীতে যে কয়েকটি আবিষ্কার বিজ্ঞানের জগতকে তোলপাড় করে দিয়েছে তারমধ্যে অন্যতম ছিলো ডিএনএ-এর গাঠনিক বিন্যাস আবিষ্কার। তিনি আরো বলেন, যে কোন জীবের জীবন থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সব কার্যক্রমই নিয়ন্ত্রিত হয় তার জিনোম বা কিছু ক্রোমোজোম বা অনেক গুলো জিনের দ্বারা। আবিষ্কারের পর থেকেই বিজ্ঞান, দর্শন এবং কলা ইত্যাদি সব ক্ষেত্রকে সমানভাবে আলোড়িত করেছে ডিএনএ। জীবনের নানান ক্ষেত্রকে এমন বহুমুখী সমৃদ্ধি দেওয়ার ক্ষেত্রে এককভাবে এত বড় ভূমিকা রাখতে পারেনি আর কোন অণু। প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার বলেন, দেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানী সংকট মোকাবেলায় বিকল্প সমাধান হতে পারে জীব প্রযুক্তির মাধ্যমে জীবকোষ থেকে জ্বালানীর রসদ তৈরি। তিনি সিভাসু’র নতুন বায়োটেকনোলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ আগামী প্রজন্মের প্রযুক্তিগত দুনিয়া সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখবে-এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় জীব প্রযুক্তি নীতি ও সিভাসু’র নতুন অনুষদের পাঠ্যসূচিতে এর প্রভাব শীর্ষক মাল্টিমিডিয়া উপস্থাপন করেন জাতীয় জীব প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো: জাহাঙ্গীর আলম। নতুন বায়োটেকনোলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের মিশন ও ভিশন উপস্থাপন করেন সিভাসু’র গবেষণা ও সম্প্রসারণ দপ্তরের পরিচালক প্রফেসর ড. এসকেএম আজিজুল ইসলাম।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন “বায়োটেকনোলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং” অনুষদে ৩০জন শিক্ষার্থী ভর্তি অনুমোদন দিয়েছে। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে সিভাসু’র হাটহাজারীস্থ রিসার্চ এন্ড ফার্ম-বেইজ্ড ক্যাম্পাসে এই অনুষদের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে। পাঁচটি বিভাগ নিয়ে গঠিত এই অনুষদের লক্ষ্য হলো-জীববিজ্ঞানের বিভিন্ন উচ্চতর বিষয়, যেমন: অ্যানিম্যাল সেলকালচার, প্ল্যান্টটিস্যু কালচার, ডিএনএ ফিঙ্গারপ্রিন্ট, রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ টেকনোলজি, জিন থেরাপি, জিনোম সিকোয়েন্সিং, ডেভেলপমেন্ট বায়োলজি, স্টেট সেল থেরাপি, ক্যানসার বায়োলজি, রিজেনারেটিভ মেডিসিন, ন্যানো টেকনোলজি, ড্রাগ ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, ভ্যাকসিন ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি বিষয়ে প্রযুক্তিগত শিক্ষা ও গবেষণা।