প্রবন্ধ


বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ
মো: মঞ্জুরুল হাসান
রোল: ১৬/১০২ রেজি: ০১৬৪৬ তৃতীয় বর্ষ, দ্বিতীয় সেমিস্টার ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদ সিভাসু। মোবাইল: ০১৮২৯-৩৬৮০১৩
“শোনো একটি মুজিবরের থেকে
লক্ষ মুজিবরের কণ্ঠস্বরের ধ্বনি-প্রতিধ্বনি
আকাশে বাতাসে ওঠে রনি
বাংলাদেশ, আমার বাংলাদেশ”

কোনো জাতি যখন প্রকৃতই কোনো সংকটের সম্মুখীন হয়, তখন ঠিকই সেই জাতির পরিত্রাণের উদ্দেশ্যে আবির্ভাব ঘটে কোনো না কোনো মহাপুরুষের। আবির্ভাব ঘটেছিল রাশিয়ায় ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিন, আমেরিকায় আব্রাহাম লিংকন, ভিয়েতনামে হো চি মিন, চীনে মাও সে তুঙ, তুরস্কে কামাল আতাতুর্ক, যুগোশ্লোভিয়ায় মার্শাল টিটো, ভারতবর্ষে মহাত্মা গান্ধী, দক্ষিণ আফ্রিকায় নেলসন ম্যান্ডেলা, কিউবায় ফিদেল ক্যাস্ট্রো, ফিলিস্তিনে ইয়াসির আরাফাত, আর বাংলাদেশে আবির্ভাব ঘটেছিল এমনই এক উজ্জ্বল জ্যোতিস্কের, ইতিহাসের পাতায় যার নাম চিরদিন স্বর্ণাক্ষরে লেখা হয়ে থাকবে, তিনি আর কেউ নন তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বর্তমান দক্ষিণ এশিয়ার বুকে যে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র আজ মানচিত্রে জ্বলজ্বল করে, সেই রাষ্ট্রটির গঠনে সবথেকে বড় অবদান শেখ মুজিবের। সে জন্যই স্বাধীন বাংলাদেশ তাকে দিয়েছে জাতির জনকের সম্মান। শেখ মুজিব ছাড়া আজকের বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অস্তিত্ব কল্পনাই করা যেত না।

১৯২০ খ্রিস্টাব্দের ১৭ মার্চ, ১৩২৬ বঙ্গাব্দের ৩রা চৈত্র, তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্ভূক্ত ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার পাটগাতি ইউনিয়নের বাইগার নদী তীরবর্তী টু্ঙ্গিপাড়া গ্রামে মা সায়েরা খাতুনের কোল আলো করে জন্ম নেন শেখ মুজিব। চার বোন আর দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। শেখ মুজিবকে সাত বছর বয়সে ভর্তি করা হয় গিমাডাঙা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে, বছর দুই গোপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলে, তারপর পিতার বদলিসূত্রে ভর্তি হন মাদারিপুর ইসলামিয়া স্কুলে। ১৯৪২ সালে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ১৯৪৪ সালে আই.এ. পাশ করেন। এরপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লাভ করেন বি. এ. ডিগ্রি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন আইন বিভাগে।

হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি শেখ মুজিবুর রহমান, ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতি ও দেশব্রতে যুক্ত তিনি। তাঁর পিতা বাড়িতে খবরের কাগজ রাখতেন। আনন্দবাজার, বসুমতী, আজাদ, মাসিক মোহাম্মদী ও সওগাত। রাজনীতিতে তাঁর আগ্রহ গড়ে ওঠে সংবাদপত্র পাঠে। এই রাজনীতি অনুরাগ প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত হয় তৎকালীন বাংলার ইংরেজ উপনিবেশবিরোধী রাজনীতির অনুসঙ্গে। তখন স্বদেশী আন্দোলনের চাপা উত্তেজনা মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জের ঘরে ঘরে। মাদারীপুরের অধ্যক্ষ পূর্ণচন্দ্র দাস ছিলেন তখন ইংরেজ সরকারের মূর্তিমান আতঙ্ক। তাকে ইংরেজ সরকার কারারুদ্ধ করেছিলেন। তাঁর কারামুক্তি উপলক্ষে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম লেখেন ‘পূর্ন অভিনন্দন’ শীর্ষক কবিতা। কবির ভাঙার গান কাব্যগ্রন্থের সেই কবিতার পঙক্তিতে আছে,
“জয় বাংলার পূর্নচন্দ্র,
জয় জয় আদি-অন্তরীন।
স্বাগত ফরিদপুরের ফরিদ, মাদারীপুরের মর্দবীর”

বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের বীজমন্ত্র “জয় বাংলা” তো কিশোরকালেই শেখ মুজিব নজরুলের ওই কবিতায় পেয়ে বুকের গভীরে তা লালন করেছিলেন। আর তাকে পাকিস্তানি হানাদারদের বাংলা ছাড়ানোর জীবনপন মুক্তিযুদ্ধে শতসহস্র বজ্রের শক্তিতে ব্যবহার করতে উদ্ধুদ্ধ করলেন মুক্তিকামী বাঙালিকে। মূলত ১৯৩৬ সালে মাদারীপুরে স্বদেশি আন্দোলনকারী এবং ভারতের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামী নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর সমর্থকদের সঙ্গেই তাঁর রাজনৈতিক জীবনের সূত্রপাত। পরিচয় ঘটে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও মুকুন্দবিহারী মল্লিকের সঙ্গে। ১৯৪৮ সালে গঠিত পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের তিনি ছিলেন অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৪৯ সালের ২৩শে জুন আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠিত হলে তিনি যুগ্ম সম্পাদকের পদ লাভ করেন এবং ১৯৫৩ সালে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে প্রাদেশিক আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভার মন্ত্রিত্ব লাভ করেন। ১৯৬৬ সালে পেশ করেন বাঙালির ম্যাগনাকার্টা নামে খ্যাত ঐতিহাসিক ছয় দফা। ‘রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিবুর রহমান ও অন্যান্য’ শিরোনামে তিনিসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা। জনগণের আন্দোলনের মুখে আইয়ুব খান ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি এ মামলা প্রত্যাহার করে নেয়। পরের দিন ২৩ ফেব্রুয়ারি ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত রেসকোর্স ময়দানে লক্ষ লক্ষ মানুষের এক নাগরিক সংবর্ধনায় তাকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। ১৯৭০ সালে জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে তাঁর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। কিন্তু সরকার গঠনের সুযোগ না দিয়ে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ১লা মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জ্ন্য স্থগিত করে দেয়। এর প্রতিবাদে ৩ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডাক দেন অসহযোগ আন্দোলনের।

বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ, বঙ্গবন্ধু রমনা রেসকোর্স ময়দানে লক্ষ লক্ষ মানুষের সম্মুখে বজ্রকণ্ঠে পাকিস্তানি স্বৈরশাসনের নিগড় থেকে বাঙালি জাতির মুক্তি ও স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন। বঙ্গবন্ধুর এই ভাষনের মধ্য দিয়েই সেদিন সূচিত হয়েছিল আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্ন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহবান। আপমর জনতার সামনে যিনি সেদিন এসে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি বাঙালির বড় প্রিয় মানুষ, বাঙালির শিকড় থেকে জেগে ওঠা এক বিদ্রোহী নেতা। তিনি কোনো সাধারণ রাজনীতিবিদ নন, তিনি একজন কবি, একজন রাজনীতির কবি। ১৯৭১ সালের ৫ এপ্রিল, মার্কিন পত্রিকা ‘নিউজউইক’ এ প্রকাশিত এক নিবন্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ‘রাজনীতির কবি’ বলে আখ্যায়িত করে লেখা হয়। “তিনি লক্ষ লক্ষ মানুষকে আকর্ষণ করতে পারেন সমাবেশে এবং আবেগময় বাগ্মিতায় তরঙ্গের পর তরঙ্গে তাদের সম্মোহিত করে রাখতে পারেন। তিনি রাজনীতির কবি”

এক পর্যায়ে ২৫ মার্চ মধ্যরাতে সামরিক বাহিনী ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙালির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ঘটায় ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকান্ড। সেই রাতে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হয় পশ্চিম পাকিস্তানে। গ্রেপ্তারের পূর্বে অর্থাৎ ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষনা দেন। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধকালে ১০ এপ্রিল বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে তাকে রাষ্ট্রপতি করে গঠিত হয় স্বাধীন বাংলাদেশের সরকার।

দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের পর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে ১৯৭১ এর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করেছিল বীর বাঙালি। দেশ স্বাধীন হলেও যাঁর আহবানে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা, সেই অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তখনও পাকিস্তানের কারাগারে অন্তরীন। ফলে স্বাধীনতা এলেও নেতার অনুপস্থিতিতে অপূর্ণতা থেকে গিয়েছিল বিজয়ের গৌরব উদযাপনে। অবশেষে দীর্ঘ প্রতিক্ষা আর উৎকন্ঠার অবসান ঘটিয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্বাধীন দেশের মাটিতে পা রাখেন। সদ্য স্বাধীন যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে একটি আত্মমর্যাদাশীল, উন্নত, আধুনিক বিজ্ঞানভিত্তিক ও সমৃদ্ধশালী দেশে পরিনত করার অভিপ্রায়ে তিনি ছিলেন বদ্ধ পরিকর। কিন্তু দেখলেন গুদামে খাদ্য নেই, মাঠে ফসল নেই, কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রিজার্ভ শূন্য। সড়ক, রেল, নৌপথ বিচ্ছিন্ন। পাকিস্তান হানাদার বাহিনা পরাজয় নিশ্চিত জেনে সম্ভাব্য সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু জোট নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রেখে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের স্বীকৃতি আদায় এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সদস্যপদ লাভ করার দিকে গুরুত্ব দিয়েছেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরে ১১৬টি দেশের স্বীকৃতি এবং জাতিসংঘসহ ২৭টি আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্যপদ লাভ করিয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের নয়মাসে পরিবহন ব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে। এমন একটি পরিস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু পূনর্গঠন কাজে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে বন্দরের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা, নৌ পরিবহন উন্নয়ন এবং বেসামরিক বিমান চলাচল শুরুর উপর গুরুত্ব দেন। মুক্তিযুদ্ধে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাও ভয়ংকর রকম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দ্রুততম সময়ের মধ্যে বঙ্গবন্ধু ট্রান্সমিশন ও বিতরণ লাইন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা পুন:প্রতিষ্ঠার কাজে জোর দেন।

মুক্তিযুদ্ধের সময় কৃষিখাতে যে ক্ষয়ক্ষতি হয় প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী তার পরিমাণ সেই সময়ের টাকায় প্রায় ৩৭৯ কোটি ৫ লক্ষ। যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশে যাতে একজন মানুষও না খেয়ে মারা না যায়, সেজন্য ব্যবস্থা নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। খাদ্য উৎপাদনে সবচেয়ে বেশি ভর্তুকি দিয়েছিলেন। ১৯৭৩ সালে প্রতিস্ঠা করেন কৃষি গবেষণা কাউন্সিল। এছাড়া বঙ্গবন্ধু জোর দিয়েছিলেন পরিবার পরিকল্পনায়। দেশের ১২ থানায় জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রন কর্মসূচীর ফাইলটি শুরু করেছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর সময় বাংলাদেশ প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৭ দশমিক ৮ শতাংশ। তখনই তিনি বলতেন, বাংলাদেশ চিরদিন অনুন্নত থাকবে না। অচিরেই উন্নত দেশের কাতারে যাবে। তিনি এই জনসংখ্যাকে শিক্ষিত ও দক্ষ মানবসম্পদে পরিনত করার পরিকল্পনাও নিয়েছিলেন। সেজন্য তিনি জাতীয় শিক্ষা কমিশন গঠন করেন। উচ্চশিক্ষার জন্য বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন গঠন করেন। ১৯৭০ সালেই তিনি বলেছিলেন, আমাদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদের মেডিকেল কলেজ এবং মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তুলতে হবে। কারিগরি শিক্ষার দিকে জোর দিতে হবে।

১৯৭১ সালের পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ধ্বংস লীলায় শিল্পক্ষেত্রে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ছিল চল্লিশ কোটি টাকার বেশি। এই ক্ষতি পূরণের জন্য জাতির পিতা নিরবচ্ছিন্নভাবে কাঁচামাল ও খুচরা যন্ত্রপাতি জোগানের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেন। তিনি ১৯৭২-৭৩ সালের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেন ৫৭৩ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এই জন্য তিনি ফ্যাক্টরি, মেশিনপত্র, গুদাম প্রভৃতি মেরামতের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ঋণদান, মূলধন বিনিয়োগে ‘ইকুইটি’ সহযোগিতা, কাঁচামাল ক্রয়, কারখানা চালু রাখার জন্য চলতি মূলধন বাবদ স্বল্পমেয়াদি ঋণ, আমদানিকৃত ও স্থানীয় কাঁচামাল নিয়মিত সরবরাহ, সেক্টরভিত্তিক সংস্থাগুলোর অধীন কলকারখানা ও উৎপাদন যন্ত্রগুলো সক্রিয় করার ব্যবস্থা করেন।

বিজ্ঞান বিষয়ক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতেও তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন। আণবিক শক্তির শান্তিপূর্ন ব্যবহারের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য, খাদ্য, কৃষি, শিক্ষা, শিল্পসহ জাতীয় অর্থনীতির বিভিন্ন খাতকে সহায়তা করার কথা ভেবে বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালে এ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য কর্মকর্তা নিয়োগ দেন। ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন। বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণার উন্নয়ন, প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও প্রয়োগ এবং বৈজ্ঞানিক আবিস্কার ও শিল্প প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে ১৯৭৩ সালে ‘বাংলাদেশ কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (বিসিএসআইআর) গঠন করেন। শুরুতেই ঢাকায় কেন্দ্রীয় গবেষণাগারসহ চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে আঞ্চলিক গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা করেন।

রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, ‘ঐ মহামানব আসে’। বাঙালি জাতীয় জীবনে মহামানব হিসেবে এসেছিলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি বাঙালির স্বপ্নের সারথী এবং স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রতীক। শত শত বছর ধরে পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ বাঙালি জাতির তিমির বিনাশী বিস্ময়কর নেতৃত্বের কালজয়ী নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে বাঙালি জাতির বিমূর্ত ইতিহাসের চরিত্র তিনি। ত্যাগ, প্রেম, সাধুতা, সৌজন্য, ক্ষমা, তিতিক্ষা, সাহস, শৌর্য, অনুগ্রহ, আত্মবিশ্বাস, তীক্ষ্ম দৃষ্টি, সমদর্শন, চরিত্র সৌন্দর্যের এতগুলি দিকের সমাহার ধুলোমাটির পৃথিবীতে বড় সুলভ নয়। তাই মানুষের একজন হয়েও তিনি দুর্লভ, আমাদের অতি আপনজন হয়ে তিনি অনুকরণীয়, বরণীয়।

বিঃ দ্রঃ উক্ত লেখার সম্পূর্ণ দায়ভার লেখকের